বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভারের রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ হলেও তিনি ঝুঁকিমুক্ত নন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
সোমবার (১০জানুয়ারি) খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের সদস্য ও তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রায় দু’মাস ধরে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। সাময়িকভাবে লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধ রয়েছে। তবে তিনি এখনও ঝুঁকিতে আছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার একজন চিকিৎসক বাংলানিউজকে জানান, রক্তক্ষরণজনিত গুরুতর সমস্যাসহ গত ১৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার লিভার সিরোসিস শনাক্ত হয়। এরপর তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ওই রক্তক্ষরণ কোনোক্রমেই পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছিল না। বাইরে থেকে রক্ত ও অন্যান্য খনিজ দিয়ে তার চিকিৎসা চলছিল। পরে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তে বিদেশ থেকে ক্যাপসুল এনে তার ক্যাপসুল এন্ডোস্কপি করা হয়। এতে রক্তক্ষরণের উৎস হিসেবে তার ক্ষুদ্রান্ত্রের নিচে একটি ক্ষত শনাক্ত করা সম্ভব হয়। চিকিৎসকদের চেষ্টায় দীর্ঘ সময় ধরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমে ব্যান্ড লাইগেশন করে সে ক্ষতটি বন্ধ করা হয়। এতে করে আপাতত রক্তক্ষরণ বন্ধ রয়েছে। তবে এতেই তিনি ঝুঁকিমুক্ত হননি।
গত রোববার (৯জানুয়ারি) রাতে খালেদা জিয়াকে সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে তার মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশে কেবিনে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
ডা. জাহিদ বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তার অবস্থা আগের মতোই আছে। সবগুলো প্যারামিটার আগের মতোই উঠানামা করছে।
এভার কেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এই দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত আছেন। মেডিক্যাল বোর্ড ইতোমধ্যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে সুপারিশ করেছেন। সে অনুযায়ী পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পঞ্চম দফা আবেদন করেন। কিন্তু সরকার সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। ফলে আপাতত তাকে বিদেশে নেওয়ার সুযোগ নেই।
ডা. জাহিদ হোসেন আরও বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশে ম্যাডামকে ৯জানুয়ারি রাতে সিসিইউ থেকে কেবিনে নিয়ে আসা হয়েছে। কেবিনে সিসিই্উ’র সব সুবিধাদি রাখা হয়েছে এবং সিসিইউ’র নার্সরা কেবিনে তার সেবায় নিয়োজিত থাকবেন।
গত ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পরদিনই লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার অবস্থার অবণতি হলে দ্রুতই তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ৫৭দিন পর তাকে আবার কেবিনে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে গত বছর এপ্রিল মাসে করোনায় আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। সে সময় পর পর দুদফা এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর জুলাই ও আগস্ট মাসে দুই ডোজ করোনার টিকা নেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।